Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভাষা ও সংস্কৃতি

 

বর্তমানে পঞ্চগড় অঞ্চলে প্রচলিত শব্দাবলী মূলত প্রাকৃত ও প্রাচীন বাংলারই সামান্য পরিবর্তিত রূপ।  পালি, প্রাকৃত, প্রাচীন মধ্য বাংলা এবং ব্রজবুলি- আসামী- হিন্দী- বিহারী ইত্যাদি শব্দগুচ্ছ এই অঞ্চলে অধিক প্রচলিত। মুন্ডা ও সাঁওতালী ভাষার কয়েকটি শব্দ যেমন চাউলি, চুলা, জাইত, পাড়া, হাল, ডোঙ্গা, মেয়েছেলে, বেটাছেলে, মেয়েলোক ইত্যাদি এই অঞ্চলে প্রচলিত। স্বামী অর্থে ‘ভাতার’ বিবা অর্থে ‘বিহা’ যুবক যুবতি অর্থে ‘গাভুর’ বিধবা অর্থে ‘আড়ি’ বাউন্ডেলে অর্থে ‘বাউদিয়া’ স্ত্রী অর্থে ‘মাইয়া’ ঘর জামাই অর্থে ‘ডাঙ্গুয়া’ ব্যাথা অর্থে ‘বিষ’ ইত্যাদি শব্দগুলো পঞ্চগড়ের ভাষায় ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

 

১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নজরুল পাঠাগারকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে সাংস্কৃতিক চর্চা গতিশীল হয়ে উঠে। অসংখ্য বই, মানচিত্র, বিশ্বকোষ, রচনাবলী ইত্যাদির সমৃদ্ধ সংগ্রহে এই পাঠাগারটি ছিল পঞ্চগড় অঞ্চলের জ্ঞান-বিজ্ঞান-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার এক অমূল্য তীর্থ ক্ষেত্র। মুক্তি যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাঠাগারের অনেক মূল্যবান বই ও এনসাইক্লোপিডিয়া জ্বালিয়ে দেয়।

 

পঞ্চগড় অঞ্চলে আঞ্চলিক ও লোকাল সংস্কৃতির মধ্যে ‘হুলির গান’ সর্বাধিক প্রচলিত ও জনপ্রিয়। হিন্দুদের হুলি পুজা থেকে হুলির গান নামটির উৎপত্তি হলেও সমসাময়িক ঘটনা বা অসংগতিপূর্ণ সামাজিক চিত্র, প্রেম কাহিনী ইত্যাদিকে কেন্দ্র করেও ব্যাঙ্গাত্মক ও রসাত্মকভাবে এই গান পরিবেশিত হয়। সাধারণত শীতকালে রাতের বেলায় এ গান পরিবেশিত হয়। হুলি পালা শ্রেণীর গান। এতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা থাকে ১০- ২০ জন পর্যন্ত। এই গানে যেমন রয়েছে নাটকীয়তা তেমনি আছে কাহিনীর ধারাবাহিক বিন্যাস। কাহিনীকে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য একজন ছোকরা (মেয়ের সাজে ছেলে অভিনেতা) এবং একজন সং (জোকার) উপস্থিত থাকে। এরাই দর্শক ও শ্রোতার মনযোগ আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু। হুলি পরিবেশনের সময় ঢোল, বাঁশি, কাসর, সারেঙ্গী ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র এবং বর্ণিল পোশাক ব্যবহৃত হয়।